Sign In

ইসলামে নারীর হত্যাকারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড

ইসলামে নারীর হত্যাকারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড

অনেকের মনেই এই প্রশ্ন আসে যে, ইসলামে নারীর হত্যাকারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড কিনা? নাকি অন্য কোনো বিষয় আছে ইসরামে নারীর হত্যাকারীর বিষয়ে। চলুন এই বিষয়ে আজ কুরআন ও হাদিসের আলোকে জেনে আসি।

ইসলাম মানুষের জন্য একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান। এখানে ভালো কাজের জন্য যেমন আছে পুরষ্কার এবং খারাপ কাজের জন্য রয়েছে শাস্তি। তেমনই ইসলামের মহিলা বা নারীর হত্যাকারীর শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড দেওয়া বিধান রয়েছে।

হে যারা ঈমান এনেছ) তােমাদের জন্যে নর হত্যার কিসাস গ্রহণ সম্পর্কিত বিধান দেয়া হলাে। স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন ব্যক্তি, ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাস ও নারীর বদলে নারী।

সূরা আল বাকারা: ১৭৮

ইসলামে নারীর হত্যাকারীর শাস্তি

স্বাধীন ব্যক্তির হত্যাকারী কোনাে স্বাধীন ব্যক্তি হলে যেমন তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে, তেমনি কোনাে ক্রীতদাস বা কোনাে নারী হত্যার বদলেও হত্যাকারী স্বাধীন ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে।

স্ত্রী হত্যার অপরাধে পুরুষকে এবং পুরুষ হত্যার অপরাধে স্ত্রীলােককে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে। কোনাে প্রভাবশালী ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে যেমন, কোনাে একজন প্রভাবশালী পুরুষ লােকের কিসাস স্বরূপ মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে, তেমনি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে একজন অসহায় নারী হত্যার কিসাসেও।

ইসলাম পূর্ব জাহেলী যুগে একজন নিহত ব্যক্তির হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ডকে যথেষ্ট মনে করা হতাে না, বরং তারা প্রতিপক্ষের বহুলােককে হত্যা করা ছাড়া তাদের প্রতিশােধ স্পৃহা অবদমিত হতাে না তেমন দাস বা নারী হত্যার কিসাসে তারা স্বাধীন পুরুষদের বহু লােককে হত্যা করার আগে শান্ত হতাে না।

ইসলামে নারীর হত্যাকারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড

উপরােক্ত আয়াতে যে স্বাধীনের বদলে স্বাধীন, দাসের বদলে দাসের এবং নারীর বদলে নারীর মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা হয়েছে, তা ছিল জাহেলী যুগের এক বিশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে।

আল্লামা ইবনে কাসীর (র)-এর বর্ণনা অনুযায়ী ইসলাম পূর্ব আরব গােত্রের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে।

এতে স্বাধীন পুরুষ, নারী ও কৃতদাসের বহু লােক নিহত হয়।

তাদের পরস্পরের মধ্যে বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়ার পূর্বেই ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়, আর তারা উভয় গােত্রই ইসলাম গ্রহণ করে। ইমলাম গ্রহণের পর তাদের মধ্যে কিসাস সম্পর্কে কথাবার্তা চলছিল।

তাদের প্রবল গােত্রটি দাবী করে বলে যে, তাদের প্রত্যেক নিহত পুরুষ, নারী ও কৃতদাসের পরিবর্তে অপর গােত্রের, এক একজন স্বাধীন লােককে হত্যা না করা পর্যন্ত তারা কোনাে মীমাংসায় পৌছবে না।

এহেন জাহেলিয়া সুলভ দাবীর জবাবে উপরােক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়। যাতে তাদের মীমাংসার জন্যে কিসাস স্বরূপ স্বাধীন পুরুষের বদলে স্বাধীন পুরুষ, নারীর বদলে নারী, ক্রীতদাসের বদলে ক্রীতদাসকে মৃতদণ্ড দেয়ার বিধান দেয়া হয়েছে।

ইসলামে নারীর হত্যাকারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড

ইসলামে হত্যাকারীকেই হত্যার বদলে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ইনসাফ ভিত্তিক বিধান জারী করা হয়েছে। হত্যা জঘন্য অপরাধ। একটি জীবন, চাই তা স্বাধীন ব্যক্তির হােক, অথবা গােলামের জীবন হােক; চাই তা পুরুষের হােক, অথবা হােক কোনাে নারীর।

হত্যার পরিবর্তে হত্যাই হলাে ইনসাফপূর্ণ কাজ আর ভবিষ্যতের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার গ্যারান্টিও বটে।

অপরাধের বিচার যথার্থ ও ইনসাফপূর্ণ হলে সে সমাজে মানব জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তার সম্ভাবনা থাকে না। রাব্বল আলামীন তাই সামাজিক অনাচারের মূলােৎপাটনের ব্যবস্থাই করেছেন এ আয়াতের নির্দেশে ।

ঘটনার প্রতি ইংগিত করে বলা হয়েছে যে, বিশেষ ঘটনার প্রেক্ষিতে আলােচ্য আয়াত নাযিল হয়েছিল। আয়াতের মর্মার্থ এটাই সাব্যস্ত হয় যে, যে ব্যক্তি হত্যা করেছে কেবল সেই ব্যক্তিই কিসাসে দণ্ডিত হবে।

সুতরাং কোনাে নারীকে যদি কোনাে পুরুষ হত্যা করে থাকে তবে ঐ নারীর কিসাসে তার হত্যাকারী সেই পুরুষকেই মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে।-(মুফতী মুহাম্মদ শফী (র), তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন)

ইসলামে নারীর হত্যাকারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড

মুমিনদের মনের সংকীর্ণতা পরিহার করে বিবেকের পূর্ণ আশ্বস্তি ও পবিত্রতার অনুভূতি সহ স্ত্রীগমন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লামা ইবনে কাসীর (র) তাঁর তাফসীরে ইবনে কাসীরে অনেকগুলাে বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন। এখানে সংক্ষিপ্ত একটি বর্ণনার উদ্ধৃতি দেয়া গেল।

একদিন হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (রা) দাঁড়িয়ে আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! বিগত রাত্রে আমি আমার স্ত্রীর কাছে সেই অভিলাষ ব্যক্ত করেছিলাম যা সাধারণত একজন পুরুষ তার স্ত্রীর কাছে করে থাকে। আমার স্ত্রী জানালাে, সে ঘুমিয়েছিল। কিন্তু তার সে কথাকে আমি বাহানা মনে করে তার সাথে সহবাস করেছি।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *