মানব ইতিহাসের জঘন্যতম অধ্যায় – পুরুষকে হত্যা করে নারীকে জীবিত রাখা
প্রিয় বন্ধুরা আজকে আমরা জানবো মানব ইতিহাসের জঘন্যতম অধ্যায় – পুরুষকে হত্যা করে নারীকে জীবিত রাখা নিয়ে। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত এই ঘটনাটি মুসলমানদের জন্য খুবই শিক্ষণীয় বিষয়। আশা করছি আপনি এটি উপাভোগ করবেন এবং কিছু শিখতে পারবেন।
গত পর্বে আমার আলোচনা করেছিলাম কুরআনের আলোকে পুরুষের জীবনে নারীর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে। আশা করি আপনাদের এটি ভালো লেগেছে। দয়া করে আজকের পাঠ মানব ইতিহাসের জঘন্যতম অধ্যায় – পুরুষকে হত্যা করে নারীকে জীবিত রাখার বিষয়টি জানুন এবং পরিচিত জনদের সাথে শেয়ার করুন।
স্মরণ করা সেই সময়ের কথা যখন আমি ফেরাউনী সম্প্রদায় থেকে তােমাদের মুক্তি দিয়েছিলাম, যারা তােমাদের মর্মান্তিক যাতনায় ডুবিয়ে রাখতাে। তারা তােমাদের পুত্রদের যবাই করতাে আর কন্যাদের জীবিত রাখতাে। বস্তুত এটা ছিল তােমাদের রবের পক্ষ থেকে এক কঠিন পরীক্ষা।
সূরা আল বাকারাঃ ৪৯
মানব ইতিহাসের জঘন্যতম অধ্যায়
হযরত মূসা (আ)-এর সময়কার মিসরের দ্বিতীয় ফিরাউন বাদশাহর আমলের ঘটনা। একদা ফেরাউন স্বপ্নে দেখল যে, বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে একটা অগ্নিপিণ্ড মিসরের ফিরাউন বংশীয় কিবৃতি লােকদের ঘরে ঘরে প্রবেশ করলাে।
ঐ স্বপ্নের ব্যাখ্যায় সে জানতে পারলাে যে, বনী ইসরাঈল গােত্রের একটা লােকের হাতে তার রাজত্ব খতম হয়ে যাবে। আল্লামা ইবনে কাসির এভাবে বর্ণনা করেছেন।
মুফতি শফি (র)-এর মতে কেউ তাকে একথার ভবিষ্যদ্বাণী করে ছিল। যাই হােক, এ স্বপ্ন বা ভবিষ্যদ্বাণীর প্রেক্ষিতে ফিরাউন তার রাজ্যের নবজাত পুত্র সন্তানদের হত্যা করতাে আর কন্যা সন্তানদের জীবিত রাখতাে।
আল-কুরআনে ফিরাউনের এ আচরণকে বনী ইসরাঈলদের জন্য জঘন্যতম বিপদ ও পরীক্ষা বলে ঘােষণা করা হয়েছে। চারটি দৃষ্টিকোণ থেকে ইসরাঈলীদের জন্যে এটা মহাবিপদ ও পরীক্ষা ছিল।
এক, ফিরাউনী বংশের হাতে তাদের বংশের ধ্বংস হওয়া এবং তাদের ভবিষ্যত বংশ বিস্তার খতম হয়ে যাওয়া। এভাবে ইতিহাসে তাদের নাম-নিশানা শেষ হয়ে যাওয়া।
মানব ইতিহাসের জঘন্যতম অধ্যায় – পুরুষকে হত্যা করে নারীকে জীবিত রাখা
দুই. তাদের পুত্র সন্তানদের তাদেরই সামনে প্রকাশ্যে হত্যা করার কঠিন মর্মপীড়া। তিন. নর-নারীর প্রজন্মের ভারসাম্য লােপ পেয়ে মানবীয় পরিবেশ ক্ষতবিক্ষত হওয়া।
চার, পুরুষরা পরিবারের কর্তা। জন্মগতভাবে পুরুষদের উপার্জন করার ও কঠোর জীবন পরিচালনার যােগ্য করে সৃষ্টি করা হয়েছে।
আল কুরআনে নারী পুত্র সন্তানগণকে হত্যা করার পরিণামে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ অংশকে ধ্বংস করা হতাে। এটাও ইসরাঈলীদের জন্য কঠিন অগ্নি পরীক্ষা ছিল।
মূসা (আ)-এর যুগে তৎকালীন ফিরাউন তার রাজত্ব ও ক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য মানব হত্যার এ জঘন্যতম পন্থা অবলম্বন করেছিল। মানবেতিহাসের এ হচ্ছে এক অমানবিক ও নির্মম অধ্যায়।
নারীদের জন্য পুরুষ হচ্ছে জীবনযাপনের অপরিহার্য স্বাভাবিক উপাদান স্বরূপ। নারী-পুরুষ পরস্পরের জন্য পরিপূরক হলেও উভয়ের গঠন-প্রকৃতি আর আজকের সামাজিক পরিবেশের নিরিখে নারীর জন্য বরং নর অধিক কাম্য। অথচ ফিরাউন তার তখৃত ঠিক রাখার জন্য সমাজের প্রধান সদস্য নরকে হত্যা করে নারীকে ছেড়ে দিত।
মানব ইতিহাসের জঘন্যতম অধ্যায় – পুরুষকে হত্যা করে নারীকে জীবিত রাখা
ফলে নারীর জীবন এক ভয়াবহ প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়ে পড়তাে। এ ছিল নারীদের জন্য এক অসহনীয় যন্ত্রণা ও স্বাভাবিক জীবন-যাপনের পথে বিরাট প্রতিবন্ধকতা।
এ যন্ত্রণা ও যুলুমকে আল্লাহ তা’আলা (মর্মান্তিক যাতনা) হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আল্লাহ তাআলা মূসা (আ)-এর অনুসারীদের ফিরাউনের সেই কঠোর শাস্তি থেকে উদ্ধারের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন।
আল্লাহ তাআলা শেষ পর্যন্ত ফিরাউনকে নীল নদে নিমজ্জিত করে মূসা (আ)-এর সাথে বনী ইসরাঈলীদের নাজাত দিয়েছিলেন।
আপনি আরও পছন্দ করতে পারেন: