Sign In

হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীর সাথে স্বামীর আচরণ কেমন হওয়া উচিত

হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীর সাথে স্বামীর আচরণ কেমন হওয়া উচিত

চলুন আজকে জেনে নেই হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীর সাথে স্বামীর আচরণ কেমন হওয়া উচিত। পবিত্র কুরআনের আলোকে আপনাকে এই বিষয়ে কিছুটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। সাথেই থাকুন। এর আগে আমরা আলোচনা করেছি বৈবাহিক সম্পর্ক কেবল যৌন সম্পর্কই নয় এর ধারাবাহিকতায় আজকের আয়োজন।

লােকেরা তােমাকে হায়েজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বল, তা অপবিত্র ময়লা। সুতরাং তােমরা হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীদের সহবাস থেকে দূরে থাক। তারা পবিত্র হওয়ার পূর্বে তাদের (সাথে সহবাস কর না) নিকটে যেও না।

যখন তারা পবিত্র হবে তখন আল্লাহর নির্দেশিত স্থানে তাদের কাছে যাও। আল্লাহ তওবাকারী ও পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালবাসেন।

সূরা আল বাকারা: ২২২

হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীর সাথে স্বামীর আচরণ

হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে, ইয়াহুদীরা ঋতুবর্তী স্ত্রীদের তাদের সাথে খেতে দিতাে না। এমনকি তাদের সাথে এক ঘরে ঘুমাতােও না। সাহাবায়ে কিরাম এ সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলে উপরােক্ত আয়াত নাযিল হয়। অতপর রাসূলুল্লাহ (স) বলেন, “তাদের সাথে সঙ্গম ছাড়া সবকিছুই জায়েয।”

সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফে হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, হায়েজ অবস্থায় আমি হাড় চুষে দিলে তিনিও একই স্থানে মুখ দিয়ে চুষতেন। আমি পানি পান করে রেখে দিলে তিনি পাত্রের একই স্থানে মুখ দিয়ে ঐ পানি পান করতেন।

তিনি আরও বলেন, আমার হায়েজ অবস্থায় হুজুর (স) গােসলের সময় আমাকে তার মাথা ধুয়ে দিতে বলতেন। আমার ঐ অবস্থায় তিনি আমার কোলে হেলান দিয়ে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করতেন।

হাদীস শরীফে এও রয়েছে যে, একদা হুজুর (স) তাঁর কোনাে ঋতুবতী স্ত্রীকে মসজিদ থেকে (জানালা দিয়ে) বিছানা এনে দিতে বললেন। তখন তিনি ঋতুবতী বলে ওজর পেশ করলে রাসূলুল্লাহ (স) বলেন, এ তােমার হায়েজ তাে তােমার হাতে নয়।

উপরােক্ত আয়াত ও হাদীসসমূহের বর্ণনায় স্ত্রীদের হায়েজ অবস্থায় স্বামীর ব্যবহার সম্পর্কে বর্ণনা দেয়া হয়েছে। যার মূলকথা অন্যান্য জাতির ন্যায় মুসলিম জাতির স্ত্রীগণ হায়েজ অবস্থায় অস্পৃশ্য হয়ে যায় না।

ঐ অবস্থায়ও স্ত্রীরা স্বামীদের সাথে একই বিছানায় শয়ন করতে ও একই পাত্রে খেতে পারে। ইসলাম নারীদের এ প্রাকৃতিক অবস্থায়ও তাদের সাথে স্বাভাবিক ব্যবহার করার রীতি বহাল রেখেছে।

হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীর সাথে স্বামীর আচরণ কেমন হওয়া উচিত

অপবিত্রতার কারণে স্ত্রীসংগম করা জায়েয না হলেও তাদের ঐ অবস্থায় অন্যান্য স্বাভাবিক আচার-ব্যবহার বৈধ। এভাবে ইসলাম নারীদের যথার্থ মূল্য ও মর্যাদা দিয়েছে।

এখানে উল্লেখ করা যায় পাশ্চাত্যের গবেষকদের নারী সম্পর্কিত মন্তব্যের কথা। তারা ভাবতেন নারীদের আত্মা আছে কিনা? থাকলে তা কি ধরনের? কোন্ জাতীয় ? তা কি মানুষের আত্মা?

উক্ত আয়াতের মাঝের অংশে বলা হয়েছে, “যখন তারা পবিত্র হবে তখন আল্লাহর নির্দেশিত স্থানে তাদের কাছে যাও।” অর্থাৎ সহবাস কর। এখানে স্থান বলতে সঙ্গমস্থল অর্থাৎ স্ত্রীলিংগ বুঝানাে হয়েছে। স্ত্রীলিংগ ছাড়া অন্য পথে সংগম করলে তা হবে সীমালংঘন জনিত অপরাধ।

হযরত ইবনে আব্বাস (রা) ও অন্যান্যের মতে পায়খানার রাস্তায় রতিক্রিয়া হারাম বলে প্রমাণিত হয়েছে। আজকের পাশ্চাত্যের প্রগতিশীল (?)দের দেশে আইন করে সমকামিতা বৈধ করা হয়েছে।

এভাবে তারা রুচী বর্জিত হয়ে পশুত্বের পর্যায়ে অবনত হয়েছে। আর অভূতপূর্ব রােগ বিস্তার লাভের পথ সুগম করছে। তথাকথিত সভ্য জাতির মাঝে এমনি ধরনের অসভ্য আচরণ চলছে।

আয়াতের শেষাংশে বলা হয়েছে : “আল্লাহ তওবাকারী ও পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের ভালবাসেন।” এখানে আল্লামা ইবনে কাসীরের মতে তাওবাকারী বলতে গুনাহ বর্জনকারী ও হায়েজ অবস্থায় স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত ব্যক্তিকে বুঝানাে হয়েছে ;

আর পবিত্রতা অবলম্বনকারী বলতে আল্লাহর নিষিদ্ধ যাবতীয় নােংরামী ও হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীসংগম থেকে বিরত ব্যক্তিকে বুঝানাে হয়েছে। এর দু’টো অৰ্থ হতে পারে। এক, কষ্ট ও ক্ষতি ; দুই. এমন অপবিত্রতা যা মানুষ অপছন্দ করে। হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীসহবাস করলে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্যেই কষ্টকর, ক্ষতি ও অপবিত্রতা।

হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীর সাথে স্বামীর আচরণ কেমন হওয়া উচিত

স্ত্রীর ক্ষতি হলাে, হায়েজ জনিত ব্যাথার আঘাত লাগা, ব্যথিত শিরায় আঘাত লাগার কষ্ট, জরায়ুর সংকোচনসম্প্রসারণ, হায়েজে অনিয়মিতা আর স্বামীর ক্ষতি জরায়ু হতে রক্ত মিশ্রিত জীবানু পুরুষাংগের মধ্যে ঢুকে পড়ে নানা রােগের সৃষ্টি করে থাকে। এসব কারণে হায়েজ অবস্থায় স্ত্রীসংগম নিষেধ করা হয়েছে।

উত্তম রূপে পবিত্র হওয়ার পূর্বে স্ত্রীসংগম হারাম করে দিয়ে আল্লাহ তা’আলা নর-নারীকে উপরােক্ত ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার ব্যবস্থা করেছেন।

আমাদের প্রকাশিত সকল তথ্য সবার আগে পাওয়ার জন্য গালফ্হাইব এর ফেসবুক পেইজ লাইক ও ফলো করে রাখুন এবং ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *